কোয়েল পালন

ভূমিকা


“ক্ষুদ্র প্রানীর বৃহৎ দান, কোয়েল পাখীর চাষ বাড়ান” এমন বহুল কথিত শ্লোগানটির সপক্ষে বলা যেতে পারে যে, অনেক কম জায়গায়, কম খাদ্যে, কম সময়ে এবং স্বল্প পুঁজিতে কোয়েল নামক ক্ষুদ্র প্রজাতির পোল্ট্রি পাখীর চাষ করা যায়। লক্ষ্য করা যায় যে, অধিক পুষ্টি -সমৃদ্ধ খাদ্য প্রদান এবং ব্রয়লার পালনের অনেকটা অনুরূপ ব্যবস্থাপনায় ডিম ও মাংস প্রদানকারী উভয় ধরণের কোয়েল পালন করা যেতে পারে। তদুপরি কোয়েল বেশ অল্প সময়ে (প্রায় ছয় সপ্তাহে) ডিম বা মাংস প্রদানের জন্য দৈহিক বৃ্দ্ধি ও বয়সপ্রাপ্ত হয়ে থাকে। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে কোয়েল পালনের সুবিধার্থে খামারীদের প্রযুক্তিগত যথাযথ ধারণা দেয়ার ক্ষেত্রে “কোয়েল পালন” শিরোনামের প্রশ্নোত্তর পর্বের অবতারনা করা হল:


সংশ্লিষ্ট তথ্য


১. কোয়েল কি ধরণের পাখি ?

• ছোট্ট আকারের ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ডিম ও মাংসপ্রদানকারী পাখি।

২. কোয়েল কেন পালন করা হয়?

• অতি অল্প খরচে, অল্প সময়ে, অল্প জায়গায় ও অল্প খাদ্যে মুরগীর তুলনায় অধিক ওজনের ডিম ও মাংস উৎপাদনের জন্য কোয়েল পালন করা হয়।

৩. কোয়েলের মাংস ও ডিম খেলে কোন ক্ষতি হয় কি?

• না, কোয়েলের ডিম মাংসে কম কলেস্টেরল ও অধিক আমিষ আছে।

৪. একটি মুরগীর জায়গায় কতটি কোয়েল পালন করা যায়?

• প্রায় ৮টি কোয়েল পালন করা যায়।

৫. বসতবাড়ীর ঘরে কতটি কোয়েল পালন করা যায়?

• প্রায় ১০-২০টি কোয়েল পালন করা যায়।

৬. কোয়েলের দৈহিক ওজন কত হারে বাড়ে?

• অতি দ্রুত হারে, ৬-৭ সপ্তাহে ডিম ও মাংস প্রদানের উপযোগী হয়।

৭. কোয়েল বছরে কতটি ডিম দেয়?

• কোয়েল বছরে ২৫০-২৬০টি ডিম দেয়।

৮. মুরগীর ওজন তুলনামূলকভাবে কোয়েলের চেয়ে কত বেশি?

• শতকরা হারে কোয়েলের ওজন বেশি।

৯. কতদিনে কোয়েলের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে?

• কোয়েলের ডিম থেকে ১৭-১৮ দিনে বাচ্চা ফুটে।

১০. বাংলাদেশের সব জায়গায় কোয়েল পালন করা যায় কি?

• বাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পালনের খুবই উপযোগী।

১১. কোয়েলের রোগ-বালাই কি রকম?

• অন্যান্য পোল্ট্রির তুলনায় খুবই কম।

১২. কোয়েল পালতে কি রকম খরচ হয়?

• মুরগীর তুলনায় প্রায় ৬ ভাগের এক ভাগ খরচ হয়।

১৩. কোয়েলের বানিজ্যিক পালন কখন শুরু হয়?

• বাংলাদেশে ১৯৮৭-৮৮ সনে কোয়েলের বানিজ্যিক পালন শুরু হয় ।

১৪. এশিয়ার আর কোন কোন দেশে কোয়েল পালিত হয়?

• এশিয়ার সব দেশে কোয়েল পালিত হয়।

১৫. পৃথিবীতে কত জাতের কোয়েল আছে?

• পৃথিবীতে ১৭-১৮ জাতের কোয়েল আছে।

১৬. কোন জাতের কোয়েল বিখ্যাত?

• মাংস ও ডিমের জন্য জাপানের কোয়েল বিখ্যাত।

১৭. স্ত্রী এবং পুরুষ কোয়েলের পার্থক্য কি?

• পুরুষের তুলনায় স্ত্রী কোয়েল আকার ও ওজনে বড়। স্ত্রী কোয়েলের ভেন্ট ডিমের আকৃতির।

১৮. কোয়েল বছরের সব সময় পালা যায় কি?

• বছরের সব সময়ই কোয়েল পালা যায়।

১৯. কোন বয়সের কোয়েলের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো যায়?

• কোয়েলের ৮-১০ সপ্তাহ বয়সের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো যায়।

২০. একটি পুরুষ কোয়েলের সাথে কয়টি স্ত্রী কোয়েল রাখলে আশানুরূপ উর্বর ডিম পাওয়া যায়?

• ১:২, ৫:২ বা ৩:১ অনুপাতে রাখা উত্তম।

২১. স্ত্রী ও পুরুষ কোয়েল একসাথে রাখার কতদিন পর ডিম উর্বর হয়?

• স্ত্রী ও পুরুষ কোয়েল একসাথে ৪-৫ দিন রাখার পর কোয়েলের ডিম উর্বর হয়।

২২. কোয়েল কত বয়সে সর্বোচ্চ ডিম দেয়?

• ৮-১০ সপ্তাহে ৫০% এবং ১২ সপ্তাহে ৮০% ডিম পাড়ে।

২৩. স্বাভাবিক অবস্থায় ডিমের উর্বরতা কত ভাগ?

• ৮০-৮৫%।

২৪. ডিম-পাড়া শুরুর কতদিন পর বাচ্চা ফুটানো যায়?

• প্রথম ২ সপ্তাহ পরে।

২৫. কত বয়সে ডিমের উর্বরতা কমে যায়?

• ৫০ সপ্তাহের অধিক বয়সে।

২৬. কোয়েলের দৈহিক ওজনের কতভাগ ডিমের ওজন হয়?

• প্রায় ৮%।

২৭. কত বছরে কোয়েলের খামার লাভজনক হয়?

• প্রথম বছরের তুলনায় দ্বিতীয় বছরে অধিক হারে লাভবান হওয়া যায়।

২৮. কোয়েলের ডিমের রং কি?

• কয়েক জাতের কোয়েলের ডিমের রং সাদা, আর বেশিরভাগ জাতের কোয়েলের ডিমের রং বাদামীর সাথে গায়ে ফোঁটা ফোঁটা কালো দাগ থাকে।

২৯. কোয়েলের ডিমের গড় ওজন কত গ্রাম?

• ১০-১২ গ্রাম।

৩০. কি পরিমাণ তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতায় ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো যায়?

• ১৫.৫ ডিগ্রি সে. এবং ৮০% আর্দ্রতায়।

৩১. ফুটানো ডিম কতদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা ভালো?

• ৭-১০ দিন পর্যন্ত।

৩২. ডিম সংরক্ষণের জন্য কি করতে হয়?

• ফরমালডিহাইড গ্যাসে ২০ মিনিট রাখতে হবে।

৩৩. সব ডিম থেকেই কি বাচ্চা ফুটানো যায়?

• পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত ডিম উত্তম।

৩৪. সব ডিম খাওয়ার জন্য সংরক্ষণ করা উচিৎ কি?

• না, উর্বর ডিম পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩৫. কোয়েলের ডিম আর মুরগির ডিম ফুটানোর পদ্ধতিতে কোন পার্থক্য আছে কি?

• প্রায় একই পদ্ধতি।

৩৬. ডিমের জীবাণু নাশ করার জন্য কি করা দরকার?

• ফিউমিগেশন বা ধোঁয়া দেয়া করা দরকার।

৩৭. কোয়েলের দ্বারা ডিম ফুটানো যায় কি?

• বানিজ্যিকভাবে ঘরে পালিত কোয়েল দ্বারা সম্ভব নয়।

৩৮. সব মেশিনে কোয়েলের ডিম ফুটানো যায় কি?

• ডিমের আকার ছোট বিধায় সম্ভব না।

৩৯. কোয়েলের বাচ্চার ওজন কত গ্রাম?

• একদিন বয়সে ৫-৭ গ্রাম।

৪০. বাচ্চা রাখার তাপমাত্রা কত হওয়া উচিৎ?

• প্রথম সপ্তাহে শুরুতে সাধারণত ৩৫ ডিগ্রি সে., আর প্রতি সপ্তাহে ৩.৫ ডিগ্রি সে. হারে কমিয়ে আনতে হবে চার সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ।

৪১. ঘরের তাপমাত্রা ঠিক আছে কিনা তা বুঝা যাবে কিভাবে?

• কম তাপমাত্রায় কোয়েল জড়ো হয়ে থাকবে আর বেশি তাপমাত্রায় এলোপাথারিভাবে ছুটাছুটি করবে। আরামদায়ক তাপমাত্রায় সমানভাবে ছড়িয়ে থাকবে। স্বাভাবিকভাবে ঘুরাফেরা করবে ও খাবার পানি খাবে।

৪২. কোয়েলের জন্য সারা বছর একই তাপমাত্রা রক্ষা করতে হবে কি?

• গরমকালে ২ সপ্তাহ আর শীতকালে ৩-৪ সপ্তাহ তাপমাত্রা রক্ষা করতে হবে।

৪৩. বাচ্চা ফুটার পরপরই বাচ্চাকে কি খাওয়াতে হবে?

• ২৪ ঘন্টা পরে প্রথমে গ্লুকোজ পানি ও পরে খাদ্য দিতে হবে। খাদ্যের সাথে পরে ৩ দিন পর্যন্ত গ্লুকোজ ও ভিটামিন দিতে হবে।

৪৪. বাচ্চা পালনে আর কি কি করতে হবে?

• মুরগীর বাচ্চা পালনের প্রায় অনুরূপ ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪৫. বিভিন্ন বয়সের কোয়েলকে কি বলা হয়?

• ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চা, ৩-৫ সপ্তাহ পর্যন্ত বাড়ন্ত কোয়েল আর ৫ সপ্তাহের উপরের বয়সে কোয়েল বলা হয়।

৪৬. কোন কোন পদ্ধতিতে কোয়েল পালা যায়?

• লিটার ও খাঁচা উভয় পদ্ধতিতেই কোয়েল পালা যায়।

৪৭. কোন পদ্ধতিতে প্রতিটি কোয়েলের বাচ্চার জন্য কতটুকু জায়গার দরকার?

• খাঁচায় ৭৫ সে.মি. এবং মেঝেতে ১০০ সে.মি.।

৪৮. বয়স্ক কোয়েলের জন্য কতটুকু জায়গা লাগে?

• খাঁচায় ১৫০ বর্গ সে.মি. ও মেঝেতে ২৪০ বর্গ সে.মি.।

৪৯. ডিম-পাড়া এক জোড়া কোয়েলের খাঁচার মাপ কত?

• ৫''×৮'' মাপের খাঁচা লাগে।

৫০. ঘরের তাপমাত্রা কত হওয়া ভালো?

• ৫০-৬০ ডিগ্রি সে.।

৫১. ৫০টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য কোন মাপের খাঁচা প্রয়োজন?

• (১২০×৬০×৩০) সে.মি. মাপের।

৫১. খাবার পাত্রের পরিমাপ কি রকম হবে?

• ২৫ টি বাচ্চার জন্য বাজারে-প্রাপ্ত ৫০×৮×৩ সে.মি. মাপের ও ৩৫ টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ৬০×১০×৫ সে.মি. মাপের খাবার পাত্র দরকার।

৫২. বাচ্চাকে প্রথম সপ্তাহে কতটুকু খাবার দিতে হবে?

• প্রথম সপ্তাহে ৫ গ্রাম থেকে শুরু করে ৫ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত প্রতিদিন ২০-২৫ গ্রাম খাবার লাগে।

৫৩. ঘরের বিছানা কি রকম হবে?

• তুষ, বালু, ছাই, কাঠের গুড়া, টুকরা খড় ও ছন ইত্যাদি দ্বারা মেঝেতে পালার ক্ষেত্রে বিছানা দেয়া যাবে।

৫৪. বিছানা কতটুকু পুরু হবে?

• ১৩-১৬ সে.মি.।

৫৫. স্বাস্থ্যসম্মত কি কি ব্যবস্থা নিতে হবে?

• ভিজা স্যাঁতস্যাতে ভাব বর্জন করে বিছানায় ১-২% চুন মিশিয়ে দিতে হবে।

৫৬. সার্বক্ষণিক অন্ধকারে কোয়েল পালা যায় কি?

• না, দিনের একটা অংশ অন্ধকার রাখা দরকার।

৫৭. আলো না থাকলে কি ক্ষতি হয়?

• ডিম উৎপাদন ও উর্বরতা কমে যায়, খাদ্য গ্রহণ কমে যায় ও দৈহিক বৃদ্ধি সঠিক হয় না।

৫৮. দিনে কত ঘন্টা আলো থাকা দরকার?

• ১৫-১৮ ঘন্টা আলো থাকা ভালো।

৫৯. সব ধরণের কোয়েলের জন্য কি একই রকম সময়ের জন্য আলো থাকা দরকার?

• শীত ও শরৎকালে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় আলো দেয়া দরকার কারণ দিন ছোট থাকে। পুরুষ কোয়েলকে ৮ ঘন্টা আলো দিলেই চলে।

৬০. মুরগীর খাবার তৈরি করে কোয়েলকে খাওয়ানো উচিৎ হবে কি?

• না, দৈহিক বৃদ্ধি ও ডিম উৎপাদন কম হবে।

৬১. খাদ্যে কি পরিমাণ পুষ্টিমাত্রা হওয়া উচিৎ?

• ২৩-২৫% আমিষ এবং ২৫৫০-২৮০০ কিলো-ক্যালোরী/কেজি খাদ্য।

৬২. কোয়েলের বিভিন্ন বয়সের খাবারকে কি কি নামে বলা হয়?

• প্রথম ৩ সপ্তাহ সূচনা/স্টারটার, ৪-৫ সপ্তাহ বাড়ন্ত, ৬ সপ্তাহ বা তদুর্ধ্ব লেয়ার বা ব্রিডার খাদ্য বলা হয়।

৬৩. কোয়েলের খাদ্য তৈরিতে কোন সমস্যা হয় কি?

• আমিষের মাত্রা মেটানো খুবই সমস্যা।

৬৪. সুষম খাদ্য তৈরিতে সমস্যা হয় কেন?

• অধিক আমিষ-সমৃদ্ধ খাদ্য সামগ্রীর সংখ্যা খুবই কম।

৬৫. আমিষ সরবরাহ-সংশ্লিষ্ট সমস্যার সমাধান কিভাবে করা যায়?

• খাদ্য খরচ কিছ্টুা বেড়ে গেলেও অধিক আমিষ-সমৃদ্ধ শুটকি মাছের গুঁড়া, বানিজ্যিক প্রোটিন কনসেনট্রেট ফিডার মিল ইত্যাদি পরিমিত মাত্রায় মেশানো যেতে পারে।

৬৬. কোয়েলের খাদ্যে কি পরিমাণ দানাদার সামগ্রী থাকা দরকার?

• ৪০-৪৫%।

৬৭. কি কি দানাদার সামগ্রী খাওয়ানো হয়?

• সাধারণত মুরগীর খাদ্যের অনুরূপ একই সামগ্রী খাওয়ানো যাবে।

৬৮. কোয়েলের খাদ্য সারা বছর একই রকম হওয়া উচিৎ কি?

• গরমের দিনে ক্যালসিয়ামের মাত্রা (৩.৫%) বাড়াতে হবে।

৬৯. কোয়েলের ডিম ও মাংসের মধ্যে পার্থক্য কি কি?

• ডিমে কলেস্টেরল বেশি আর মাংসে অপেক্ষাকৃত আমিষ বেশি থাকে।

৭০. কোয়েল পালনে খাদ্যের খরচের পরিমাণ কত?

• অন্যান্য খামারের ন্যায় খাদ্যের খরচ ৬০-৬৫% হয়ে থাকে।

৭১. খাদ্য খরচ কমানোর উপায় কি হতে পারে?

• অপ্রচলিত খাদ্য সামগ্রীর ব্যবহার বাড়াতে হবে।

৭২. বাজারে কোয়েলের জন্য কোন তৈরি খাবার পাওয়া যায় কি?

• না, পাওয়া যায় না।

৭৩. বাজারে প্রাপ্ত তৈরি খাবার কোয়েলকে খাওয়ানো যাবে কি?

• তৈরী খাবারের সাথে আমিষ ও খনিজসমৃদ্ধ সামগ্রী বাড়াতে হবে।

৭৪. কোয়েল ও মুরগীর প্রতি কেজি খাবারের মূল্য কি একই হবে?

• না, কারণ কোয়েলের খাদ্যে তুলনামুলক বেশি আমিষ রাখতে হয়।

৭৫. পুষ্টির মধ্যে কোনটির দাম বেশি?

• আমিষ এবং ভিটামিনসমৃদ্ধ সামগ্রীর বাজার মূল্য সব সময় বেশি থাকে।

৭৬. কোয়েলের খাদ্যে দানাদার অংশ বেশি হলে ক্ষতি হবে কি?

• কোয়েল শুধু দানাগুলো খাবে বেশি বেশি, অপরাপর সামগ্রী কম খাবে এবং অপুষ্টিতে ভুগবে।

৭৭. কোয়েল প্রতিদিন কি পরিমাণ পানি পান করে?

• সাধারণত যে পরিমাণ খাদ্য খায় তার ২-৩ গুণ পানি খায়।

৭৮. দৈহিক ওজনের তুলনায় কোয়েল পানি বেশি খায় কেন?

• খাদ্যে আমিষের পরিমাণ বেশি থাকে বিধায় কোয়েল বেশি পানি পান করে।

৭৮. প্রতি কোয়েলের জন্য পানি পাত্রে কতটুকু জায়গা লাগবে?

• এক বর্গ সেন্টিমিটার।

৭৮. রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে কোয়েলের ডিম কি উপকার করে?

• উচ্চ রক্ত চাপ, বাত রোগ, হাঁপানি এবং ডায়েবেটিস রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে।

৭৯. প্রতিটি কোয়েল থেকে কি পরিমাণ খাবারযোগ্য মাংস পাওয়া যায়?

• মোট দৈহিক ওজনের প্রায় ৫৮-৬০%।

৮০. ২৫০ গ্রাম ওজনের কোয়েল থেকে কতটুকু খাবারযোগ্য মাংস পাওয়া যেতে পারে?

• প্রায় ১৫০ গ্রাম মাংস পাওয়া যাবে যা কোয়েলের দৈহিক ওজনের ৭২.৫%।

৮১. কোয়েলের ডিম কিভাবে খাওয়া যায়?

• মুরগীর ডিমের মতই খাওয়া যায় তবে খাবার কালে খাবারের সৌন্দর্য্ বৃদ্ধির জন্য সিদ্ধ ডিম (খোসা ছাড়া) সাজিয়ে দেয়া হয়।

৮১. কোয়েলের মাংস কিভাবে খাওয়া যায়?

• বিরিয়ানী, রেজালা, শিক-কাবাব, দোঁ-পিঁয়াজো, ভূনা, ফ্রাই, তন্দুরী, রোষ্ট ও অন্যান্য অত্যাধুনিক রেসিপি হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।

৮২. বর্তমানে কোয়েলের ডিমের দাম কত?

• প্রতি হালি ১০ টাকা হিসেবে বিক্রি হয়।

৮৩. ১০০টি কোয়েল পালন করে এক বছরে কত টাকা লাভ করা যেতে পারে?

• প্রায় ২২০০০-২৫০০০ টাকা।

৮৪. বানিজ্যিকভাবে ২০০০ কোয়েল পালন করলে প্রতি মাসে গড়ে কত টাকা আয় হতে পারে?

• প্রায় ৩০,৫০০ টাকা।

৮৫. কোয়েলের খাদ্য রূপান্তর দক্ষতা কত?

• ৩:১ অনুপাত।

৮৬. ডিমের চর্বির পরিমাণ কত?

• মুরগীর ডিমের তুলনায় ২.৪৫% কম।

৮৭. কোয়েলের ডিমে কুসুমের পরিমাণ কতটুকু থাকে?

• সাদা অংশ (এলবুমিন):কুসুম= ২:৩।

৮৮. কোয়েল পালনের সব চেয়ে বড় সুবিধা কি কি?

• প্রাথমিক খরচ এবং রোগ-বালাই খুবই কম।

৮৯. মুরগীর ব্রয়লার আছে কিন্তু কোয়েলের ব্রয়লার আছে কি?

• আছে, ৫ সপ্তাহে ১৪০-১৫০ গ্রাম ওজন হয়।

৯০. ব্রয়লার কোয়েলের খাদ্য দক্ষতা কত?

• ২.৯:১ অনুপাতে।

৯১. কোয়েলের ডিমের খোসা কেমন?

• মুরগীর ডিমের তুলনায় বেশ পাতলা।

৯২. কোয়েলের ডিম বিক্রিতে সমস্যা কি?

• ডিম দেখতে অনেকটা কচ্ছপের ডিমের মত বিধায় ক্রেতা সাধারণ অনেকেই সন্দেহবশত কিনতে চায় না।

৯৩. কোয়েলের ডিম বিক্রিতে বা বাজারজাতকরণে সুবিধা কি কি?

• রাস্তার ধারে, মোড়ে, শহর ও বন্দরে, পরিচিত মহলে, বড় বড় হোটেলে, অনুষ্ঠানে সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির কারণে চুক্তিভিত্তিতে উৎপাদন ও বিক্রয় হয়ে থাকে।

৯৪. কোয়েলের খামারে স্বাস্থ্য রক্ষায় কোন অসুবিধা হয় কি?

• না, কোয়েলের রোগবালাই নেই বললেই চলে বিধায় সাধারণত কোন টিকা, কৃমিনাশক ও ঔষধ প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় না।

৯৫. কোয়েল পালনে ঝুঁকিপূর্ণ সময় কখন?

• বাচ্চার বয়স দুই সপ্তাহ পর্যন্ত কোয়েল পালনে ঝুঁকি থাকে।

৯৬. কি কারণে দুই সপ্তাহ বয়সে ঝুঁকি দেখা দিতে পারে?

• ব্যবস্থাগত বা শারিরীক কারণে, অপুষ্টি ও আলো বাতাস সরবরাহ যথাযথ না হলে বাচ্চার মৃত্যুর হার বাড়তে পারে।

৯৭. কোয়েল পালনে বিরক্তিকর বিযয় কোনটি?

• দৈহিক ওজন ও অন্যান্য পোল্ট্রির তুলনায় বিরক্তিকর শব্দে কোয়েল ডাকাডাকি করে।

৯৮. কোয়েল পরিবেশগতভাবে খাপ খাওয়াতে পারে কি?

• বাহিরের কোন শব্দ শুনলে, অপরিচিত ও বহিরাগত কাউকে দেখলে ভয় পায় এবং বাসস্থানের এক কোণায় অবস্থান নেয়।

৯৯. স্ত্রী ও পুরুষ কোয়েল আলাদাভাবে দেখে চেনা যায় কি?

• পায়খানার রাস্তা না দেখে সহজে চেনা যায় না।

১০০. কোয়েলের পূর্বতন আদি জাত পাওয়া যায় কি?

• খুবই দুষ্কর কারণ জাতের বৈশিষ্ট্য বা জাত উন্নয়ণের জন্য তেমন কোন গবেষণা কার্যক্রম হাতে নেয়া হয় নি।

১০১. কোয়েলের পরিচিতি কোন সময় ঘটে?

• ১৯৮৯ সনের শেষের দিকে মাত্র দু'একটি স্থানে/প্রতিষ্ঠানে পরিচিত হয়।

১০২. কোয়েল উন্নয়ণের গবেষণা কার্যক্রম কোন প্রতিষ্ঠানে কোন সনে আরম্ভ হয়?

• ১৯৮৯ সনে সাভারস্থ বাংলাদেশ প্রাণি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পোল্ট্রি গবেষণা বিভাগে শুরু হয়।

১০৩. বর্তমানে ভালো জাতের কোয়েল কোথায় পাওয়া যায়?

• ঢাকাস্থ কাটাবন বাজারে খোঁজ নিলে পাওয়া যায়। এ ছাড়া শহর অঞ্চলেও দেশী/বিদেশী বিভিন্ন আকার, আকৃতি ও রঙের কোয়েল বছরের সব সময়ই পাওয়া যেতে পারে।